Daily Prothom Barta - Menu
২২ বছর পর ব্যাবসায়ী সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলায়: জাকির খানসহ সবাই খালাস
শহর প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জে বিকেএমইএর সাবেক সহসভাপতি সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলায় সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মমিনুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
এ মামলায় আসামি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খান। তিনিসহ খালাস পাওয়া অন্য আসামিরা হলেন জাকির খানের দুই ছোট ভাই জিকু খান ও মামুন খান, তাঁর সহযোগী জঙ্গল ওরফে লিটন, মোক্তার হোসেন, মনিরুজ্জামান শাহীন, নাজির আহমেদ ও আবদুল আজিজ। তাঁদের মধ্যে মনিরুজ্জামান শাহীন মারা গেছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, সাব্বির হত্যা মামলায় ৫২ জন সাক্ষীকে তালিকাভুক্ত করা হলেও সাক্ষ্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়েছে ২১ জনের। মামলাটি তদন্ত করেছেন অন্তত ৯ জন কর্মকর্তা। রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে না পারায় আদালত সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন। যিনি খুন হয়েছিলেন, তাঁর ভাই তৈমুর আলম খন্দকার সুপ্রিম কোর্টের অ্যাপিলেট ডিভিশনের একজন আইনজীবী, নিহত ব্যক্তির মেয়েও একজন আইনজীবী। তাঁরা নিজেরাও এই মামলা তদারক করেছেন। এখন মামলার বিষয়ে পরবর্তী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা বাদীপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ নগরের মাসদাইর এলাকায় নিজ বাড়ির সামনে সাব্বির আলম খন্দকারকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। নিট পোশাক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিকেএমইএর সাবেক সহসভাপতি সাব্বির বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা (বহিষ্কৃত) ও বর্তমানে তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকারের ছোট ভাই। ঘটনার ২২ বছর পর এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ নগরের মাসদাইর এলাকায় নিজ বাড়ির সামনে সাব্বির আলম খন্দকারকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। নিট পোশাক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিকেএমইএর সাবেক সহসভাপতি সাব্বির বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা (বহিষ্কৃত) ও বর্তমানে তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকারের ছোট ভাই।
রায় ঘোষণার সময় মামলার বাদী তৈমুর আলম খন্দকার আদালতে ছিলেন না। তবে আদালতে ছিলেন নিহত সাব্বির আলম খন্দকারের মেয়ে ও মামলার আইনজীবী ফাতেমা তুজ জহুরা (শবনম)। রায়ের পর অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে আদালতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। ন্যায়বিচার পেতে তাঁরা উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানান।
আসামিপক্ষের আইনজীবী রাজীব মণ্ডল বলেন, জাকির খানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ৩৩টি মামলা আদালতে বিচারাধীন ছিল। এর মধ্যে তিনি ৩০টি মামলায় ইতিমধ্যে খালাস পেয়েছিলেন। বাকি তিনটি মামলার মধ্যে দুটিতে জামিনে আছেন তিনি। ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির হত্যা মামলায় খালাস পেলেন তিনি। এ রায়ের মধ্য দিয়ে তাঁর মুক্তি পেতে আর কোনো বাধা রইল না।
মঙ্গলবার সকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে সাবেক ছাত্রদল নেতা জাকির খানসহ অন্য আসামিদের আদালতে আনা হয়। এর আগেই আদালত চত্বরে জাকির খানের সমর্থকেরা উপস্থিত হন। মামলার রায় ঘোষণার পর তাঁরা আদালত প্রাঙ্গণে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, তৈরি পোশাক শিল্প খাতে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠ ছিলেন ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার। ২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইর এলকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন তিনি। এ ঘটনায় তাঁর বড় ভাই তৈমূর আলম বাদী হয়ে ১৭ জনকে আসামি করে ফতুল্লা থানায় মামলা করেন। মামলায় ৯ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়। পরে তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। ২০০৬ সালের ৮ জানুয়ারি আদালতে ৮ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
সাব্বির আলম খন্দকার খুন হওয়ার পর আসামি জাকির খান বিদেশে চলে যান। পরে দেশে ফিরে এলে ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।