Daily Prothom Barta - Menu
সোনারগাঁয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, নারীসহ আহত-১২
শহর প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ পৌর এলাকায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার রাতে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন গ্রুপের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় তিনটি বাড়ি, দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ভূক্তভোগীরা জানিয়েছেন। হামলায় নারীসহ ১২জন আহত হয়েছে।
আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, স্থানীয় ক্লিনিক, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পর সোনারগাঁ থানা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোতালেব মিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি নেতারা ভাঙচুর করা তিনটি বাড়ি ও দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষে সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে চলে যাওয়ার পর আত্মগোপনে থাকা সোনারগাঁয়ের বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে আসেন। প্রকাশ্যে আসার পরই উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের অনুসারী পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাহিম আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর করার জন্য ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। পরদিন সকালে জাপা নেতা মুজিবুর রহমানের পৌর এলাকার মুন্সিরাইল বাজারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে। এছাড়াও ভূমি অফিস, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও তাদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করতে উঠে পরে লাগে। এ বিষয়টি রাইজদিয়া গ্রামের যুবদল কর্মী সজিব মিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেনের বিচার দেন। মোশারফ হোসেন আব্দুর রাহিমের কাছে জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে গত রোববার বিকেলে নোয়াইল এলাকায় তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে লোকজন নিয়ে হামলা করে তাকে মারধর করেন। মারধরের বিষয়টি উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের কাছে রাহিমের বিচার দাবি করলে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। পরে গত সোমবার রাতে মোশারফ অনুসারী যুবদল নেতা হাসনাইনসহ কয়েকজন ক্ষিপ্ত হয়ে মুন্সিরাইল বাজারে গিয়ে রাহিমকে পেয়ে সজিবকে মারধর করার কারণ জানতে চাইলে তাদের মধ্যে বাগ বিতন্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে একে অপরের ওপর হামলা ঘটনা ঘটে। এতে মান্নান অনুসারী আব্দুর রাহিম, আব্দুল্লাহ, মোশারফ অনুসারী পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক নাদিম মিয়া ও যুবদল কর্মী মো.সানি আহত হয়। আহতদের সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, স্থানীয় ক্লিনিক, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরবর্তীতে আব্দুর রাহিমের ওপর হামলার খবরে তার শ্যালক হাসান মিয়ার নেতৃত্বে ৩০-৩৫জনের একটি দল লাহাপাড়া গ্রামের যুবদল কর্মী সজিবের বাড়িঘর, রাইজদিয়া গ্রামের জাতীয় পার্টির নেতা মুজিবুর রহমানের বাড়ি, দোকান ও যুবদল কর্মী সজিব মিয়ার বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এসময় সজিব, লামিয়া, সেলিনা, আয়েশা আক্তারসহ আরো ৮জন আহত হন। হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
সোনারগাঁ পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির রফিক বলেন, শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর রাহিমের নেতৃত্বে কয়েকজন পৌর এলাকার গুরুত্বপূর্ন অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আত্মগোপনে থাকা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছে। ইতোমধ্যে একটি ড্রেজার থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছেন। এসব অপকর্ম করতে বাঁধা দেওয়ার নেতাকর্মীদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
অভিযুক্ত পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাহিমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ক্ষুদে বার্তা দিলেও সাড়া মেলেনি।
সোনারগাঁ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন বলেন, রাহিমের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ শীর্ষ নেতাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। বিষয়গুলো সম্পর্কে তাকে ডেকে সতর্ক করা হয়েছে।
সোনারগাঁ থানা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান বলেন, বিষয়টি নিজেদের মধ্যে ঘটেছে। দু’পক্ষকে ডেকে সমাধান করা হবে।
সোনারগাঁ থানার ওসি এস এম কামরুজ্জামান পিপিএম বলেন, বিএনপির দুই গ্রুপের হামলা, ভাঙচুরের ঘটনা শুনেছি। তবে কেউ এখনো অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভিডিও
...অন্যান্য বিভাগের আরো কিছু খবর...
শিরোনাম