Daily Prothom Barta - Menu
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে গনপরিবহন চলাচল বন্ধ
নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় ছাত্রদের গাড়ি ভাংচুর এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স পরিক্ষার নামে হয়রানী ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার দাবীতে ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ রুটে সকল প্রকার গনপরিবহন চলাচল বন্ধ রেখেছে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। শুক্রবার(৩আগষ্ট) সকাল থেকে মালিকও শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। কোন রকম আগাম ঘোষনা ছাড়া গনপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়ে যাত্রীরা। নারায়ণগঞ্জ টার্মিনালসহ বিভিন্ন বাস স্ট্যান্ডগুলোতে যাত্রীদের র্দীঘক্ষন দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
বাস চলাচল বন্ধ থাকায় নারায়ণগঞ্জ থেকে অনেক যাত্রীকে বিকল্প ব্যবস্থায় সিএনজি, রিক্সাসহ বিভিন্ন পরিবহনে করে ঢাকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে হয়। আর এই সুযোগে রিক্সা ও সিএনজি চালকরা দ্বিগুন ও তিনগনের বেশী ভাড়া হাতিয়ে নিচ্ছেন যাত্রীদের কাছ থেকে।
নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস মালিক সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন জানান, রাস্তায় কোন কারন ছাড়াই ছাত্ররা নির্বিচারে গাড়ি ভাংচুর করছে। গত পাচঁ দিনে নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন রুটে শত শত গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। এতে অনেক পরিবহন শ্রমিক আহত হয়েছে। শ্রমিকরা নিজের জীবনের নিরাপত্তার দাবিতে বাস চালাচ্ছেনা। বাস ভাংচুরের কারনে মালিকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। যে কারনে শ্রমিকরা গাড়ি চালাতে চাচ্ছেনা। তবে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার কেন্দ্রীয় কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
নারায়ণগঞ্জ পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি সামসুজ্জামান জানান, রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালের সামনে বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনার পর থেকে প্রতিদিনই ছাত্ররা রাস্তায় যানবাহন ভাংচুর করছে। চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির কাগজপত্র , ফিটনেস পরিক্ষার নামে গাড়ির চাবি নিয়ে যাচ্ছে। এতে করে সড়কে নানা হয়রানির শিকার হচ্ছে পরিবহন শ্রমিকরা । অনেক জায়গায় গাড়ি ভাংচুরের কারনে শ্রমিকরা আহত হয়েছে। কিন্তু এসব ঘটনা মিডিয়ায় আসছেনা। তাই বাধ্য হয়ে শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে সকাল থেকে গাড়ি চলাচল বন্ধ রেখেছি আমরা। তিনি বলেন, গনপরিবহন ও রাস্তায় শৃংখলা আমরাও চাই। আমারা জীবিনের নিরাপত্তা চাই। সকারকে এই বিষয়য়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।
নারায়ণগঞ্জ বাস টার্মিনালে দাড়িয়ে থাকার যাত্রী সালাম মিয়া জানান, কোর রকম পূর্ব ঘোষনা ছাড়া গনপরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় যাত্রীরা চরম দুভোর্গে পড়েছে। র্দীঘ সময় দাড়িয়ে থেকে বাস না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে ভেঙ্গে বিকল্প পরিবহনে ঢাকায় যেতে হয়েছে। এদিকে ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন দুরপাল্লার গাড়ির সাথে সল্পদুরত্ব রুটে চালচলকারি বাস মিনিবাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সফিকুল ইসলাম নামের আরেক যাত্রী বলেন, পরিবহন মালিক শ্রমিকদের কাছে যাত্রীরা জিন্মি হয়ে পড়েছে। তারা যে ভাবে হঠাৎ করে গনপরিবহন রাস্তায় চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে তা মোটেও উচিত হয়নি। আর এতে যাত্রীরা বাসা থেকে বের হয়ে এসে দুভোর্গের শিকার হচ্ছেন। তিনি বলেন, রিক্সা ও সিএনজি চালকরা এই সুযোগে কয়েকগুন ভাড়া হাতিয়ে নিচ্ছেন। তিনি বলেন, সড়কে যে বিশৃংখরা চলছে তা দুর করতে সরকাকে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
মেঘনা ঘাট থেকে ঢাকা যাবেন হোসেন মিয়া। কিন্তু তিন ঘন্টা দাড়িয়ে থেকে কোন যানবাহন না পেয়ে মেঘনা থেকে ঢাকার গুলিস্থান যেতে সিএনজি পাচঁশ টাকায় সিএজি ঠিক করেছেন। তিনি জানান, তার এক নিকট আত্বীয় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তার চিকিৎসা করানোর জন্যই তিনি বাধ্য হয়ে বেশী টাকা ভাড়া গুনে ঢাকা যাচ্ছেন।
উৎসব পরিবহনের বাসের চালক সাব্বির হোসেন জানান, রাস্তায় কোন দুর্ঘটনা বা কোন কিছু ঘটলেই গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। কিন্তু এর কোন বিচার হয়না। তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা ঘটলে যেমন বাসের চালক ও হেলপাড়কে আইনের আওতায় আনা হয় ঠিক তেমনি বাবে কেউ যদি অন্যায় ভাবে বাস ভাংচুর ও অগিনসংযোগ করে তাদেরও আইনের আওওতায় নিয়ে আসার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। তবেই সড়কে শৃংখলা ফিরে আসবে বলে তিনি দাবি করেন।#