Daily Prothom Barta - Menu
নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী জেলা কমিটির সংগঠকসহ দুইজনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী


শহর প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরে অবস্থিত ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে দালাল চক্র নির্মূলে বিশেষ অভিযান চালিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির সংগঠকসহ দুইজনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। এসময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে ৪ পিস ইয়াবা ও একটি সুইচ গিয়ার।
রোববার দুপুরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যৌথবাহিনী এ অভিযান চালায়। পরে আটককৃতদের সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সংগঠক মো. জিদান ও শহরের ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের দালাল ইকবাল হোসেন। এ ঘটনার পর মো. জিদানকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি।
বিকেলে সংগঠনের আহ্বায়ক নিরব রায়হান ও সদস্য সচিব মোগাম্মদ জাবেদ আলম স্বাক্ষরিত এক লিখিত বিজ্ঞপ্তিতে মো. জিদানকে বহিষ্কারের আদেশের বিষয়টি জানানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শহরে খানপুরে অবস্থিত ৩০০ শয্যাবশিষ্ট হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে স্টাফদের হুমকি ধামকি দিয়ে অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছিলো জিদান। রোগী ও রোগীদের সঙ্গে থাকা স্বজনদের নানাভাবে হয়রানির পাশাপাশি হাসপাতালের অভ্যন্তরে সে ইয়াবা বিক্রি করতো। জিদানের বিষয়ে ভুক্তভোগীরা সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ দিলে রোববার দুপুরে হাসপাতালে যৌথ অভিযান চালায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ। অভিযানে হাসপাতালের ভেতর থেকে জিদান ও ইকবাল হোসেনকে আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় ৪ পিস ইয়াবা।
নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (সুপার) ডা. এম এ বাশার বলেন, ‘যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে দুইজনকে আটক করে নিয়ে গেছে। তাদের মধ্যে একজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক বলে জানতে পেরেছি।’
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন বলেন, ‘জিদান বাড়িঘরে রং ও ইন্টেরিয়র ডিজাইনের কাজ করতো। গত জুলাই-আগস্টে আন্দোলন চলাকালে সে পিঠে ছররা গুলিতে আহত হয়েছিল। এরপর থেকে সে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে হাসপাতালে দালালি ও স্টাফদের হুমকি ধামকি দিয়ে নানা ধরনের সুবিধা আদায় করতো। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত জিদান ও ইকবালকে আটক করেছে। তাদের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির আহ্বায়ক নিরব রায়হান বলেন, ‘জিদান জেলা কমিটির সংগঠক ছিল। তাকে আটকের বিষয়টি জানতে পেরে আমরা প্রশাসনকে বলেছি তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। সেই সাথে আমরাও তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছি।’
বহিষ্কার আদেশে বলা হয়- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নীতি-আদর্শ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত থাকায় মো. জিদানকে (সংগঠক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নারায়ণগঞ্জ জেলা, সদর থানা) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হলো। বহিস্কৃত ব্যক্তির কোনো ধরনের অপকর্মের দায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নারায়ণগঞ্জ জেলা নেবে না। জেলার দায়িত্বরত সব পর্যায়ের ব্যক্তিদের তার সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা দেয়া হলো।
বহিষ্কার আদেশে আরও বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কখনও চাঁদাবাজ, দখলদারিত্ব, অবৈধ কারবারি, নীতি-আদর্শ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি, রাষ্ট্রবিরোধী, আইনবিরোধী কোনো কার্যকলাপ সমর্থন করে না। যদি কেউ এতে জড়িত আছে বলে প্রমানিত হয়, তবে তার বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা দায়বদ্ধ থাকবে না এবং তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে কোনো প্রকার আপত্তি থাকবে না।